নিজস্ব প্রতিবেদক :
গোপালপুরে বানোয়াট মামলা নিয়ে বাদী, ভিক্টিম ও সাক্ষীসহ নিরীহ স্বজনকে হয়রানির অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ প্রকৃত বিবাদীদের গ্রেফতার না করে ক্ষতিগ্রস্ত বাদির বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা নিয়ে সন্ত্রাসীদের আশকারা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। গত রবিবার বিকেলে গোপালপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মিলনে বীরনলহরা গ্রামের বাসিন্দারা এ অভিযোগ আনেন। লিখিত অভিযোগে মামলার বাদী শামছুল হক জানান, গত ৩০ নভেম্বর দুপুরে আলমনগর বোর্ড বাজারে সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্য সুপারি ব্যবসায়ী সুব্রতকে লাঞ্জিত করে সন্ত্রাসী মোন্নাফ ও আলামিন। বাদির পুত্র রেজাউল করিম সন্ত্রাসীদের হাত থেকে সুব্রতকে রক্ষা করেন। সন্ত্রাসীরা এতে ক্ষুব্দ হয়। তারা রেজাউলকে শায়েস্তার হুমকি দেয়। এর জের ধরে ওই দিন রাত সাড়ে ৮টায় রেজাউল আত্মীয় বেলাল হোসেনের পুত্র হৃদয়কে নিয়ে বোর্ড বাজারে রওনা হলে কুখ্যাত মোন্নাফ, আলামিন, অরুন, রুহুল আমীন, লিটন, মুক্তার হোসেন, মনির হোসেন, আব্দুল করিমসহ ৮/১০ সন্ত্রাসী পথরোধ করে তাদের মারপিট শুরু করে। তাদের ডাকচিৎকারে তিনি (বাদি) তার ছোটভাই মর্তুজা আলী এবং ছোট ছেলে রাসেলকে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছলে সন্ত্রাসীরা পুনরায় সকলের উপর চড়াও হয়। তাদের হামলায় সবাই আহত হয়। আহত হৃদয়ের পকেট থেকে ১০ হাজার টাকাও ছিনিয়ে নেয় সন্ত্রাসীরা। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা কেটে পড়ে। ওই রাতেই আহতদের গোপালপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে ১লা ডিসেম্বর শামসুল হক বাদি হয়ে বেআইনী জনতাবদ্ধ হয়ে গতিরোধ করে খুন করার উদ্দেশ্যে মারপিট এবং গুরুতর জখম করত নগদ টাকা চুরির অপরাধে গোপালপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওই ঘটনার কোনো তদন্ত না করেই রহস্যজনক কারণে গত ২ ডিসেম্বর ১ নং আাসামী মোন্নাফের ভাই মুক্তার হোসেনকে বাদি সাজিয়ে নয়জনকে আসামী করে থানায় পাল্টা মামলা গ্রহন করে। মামলার ধারা হুবুহু এক। যেন কার্বন কপি। ঘটনার দিন একই। শুধু ক্ষণ রাত সাড়ে নয়টা। লুটের অঙ্ক দশের স্থলে ৫০ হাজার টাকা। মামলায় আসামী করা হয় পূর্বোক্ত মামলার বাদি, আহত তিন ভিক্টিম, সাক্ষী এবং নিরীহ গ্রামবাসিকে। ওই গ্রামের সোহেল অভিযোগ করেন, ঘটনার সময় তিনি উপজেলা পরিষদে সরকারি কাজে ব্যস্ত ছিলেন। অথচ তাকে ওই মামলার আসামী করা হয়েছে। অভিযোগে আরো বলা হয়, পুলিশ পাল্টা মামলা নেয়ার পর কালিহাতি উপজেলা থেকে একদল সাংবাদিক মোটরসাইকেল নিয়ে ওই গ্রামে আসেন এবং খবর লেখার পারিশ্রমিক বাবদ শামসুল হকের নিকট পারিতোষিক দাবি করেন। তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করলে তারা চলে যান। পরে ওই সাংবাদিকরা পাল্টা দায়ের করা মামলার পক্ষ নিয়ে দুটি অখ্যাত ও আন্ডাগ্রাউন্ড পত্রিকায় আংশিক, ফরমায়েশী ও মনগড়া খবর প্রকাশ করেন বলে লিখিত অভিযোগে বলা হয়। তিনি প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার, পাল্টা মামলা প্রত্যাহার এবং হয়রানি বন্ধের দাবি জানান। এ সময়ে গ্রামবাসির পক্ষে মফিজ উদ্দীনসহ দশবারোজন গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। এ ব্যাপারে গোপালপুর থানার ওসি জহিরুল ইসলাম জানান, দুপক্ষই মারামারি করেছে। দুই পক্ষই কমবেশি আহত হয়েছে। এমতাবস্থায় দ্বিতীয় পক্ষের অনুরোধে পাল্টা মামলা নেয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে যারা দোষী বলে অনুমিত হবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এব্যাপারে ঘটনার পর পরই অকূস্থলে যাওয়া উপজেলা ভাইসচেয়ারম্যান এবং পৌর আওয়ামীলীগের সম্পদক আব্দুল লতিফ জানান, পাল্টা মামলার বাদী মোক্তার হোসেন উদেশ্যমূলক ভাবে বানোয়াট মামলা দিয়ে নিজের বাহামভূক্ত সন্ত্রাসীদের রক্ষর অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।